বাংলাদেশে ইন্টারনেটের খরচ কমানোর লক্ষ্যে সাম্প্রতিক সময়ে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এই উদ্যোগগুলোর মধ্যে সামিট কমিউনিকেশনসের ইন্টারনেট সেবার দাম কমানোর ঘোষণা উল্লেখযোগ্য।
সামিট কমিউনিকেশনসের দাম কমানোর ঘোষণা | Announcement of Internet Price in Bangladesh from Summit Communications.
২২ এপ্রিল ২০২৫, মঙ্গলবার, সামিট কমিউনিকেশনস লিমিটেড তাদের ফাইবার অপটিক নেটওয়ার্ক সেবার দাম কমানোর ঘোষণা দেয়। তারা আইটিসি (International Terrestrial Cable) এবং আইআইজি (International Internet Gateway) পর্যায়ে ১০% এবং এনটিটিএন (National Telecommunication Transmission Network) পর্যায়ে ১৫-২০% পর্যন্ত দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়। এই পদক্ষেপটি সরকারের সাশ্রয়ী মূল্যে উচ্চমানের ইন্টারনেট সরবরাহের লক্ষ্যে নেওয়া উদ্যোগের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ।
ইন্টারনেটের দাম ও প্যাকেজ Internet Price in Bangladesh 2024
২০২৪ সালে, বাংলাদেশের ইন্টারনেট সেবার দাম সাধারণত ৫০০ টাকা থেকে ১,২০০ টাকার মধ্যে ছিল, যা স্পিড ও প্যাকেজের উপর নির্ভর করত। উদাহরণস্বরূপ, Carnival Internet-এর ১০ এমবিপিএস স্পিডের প্যাকেজের দাম ছিল ৫২৫ টাকা, যেখানে ২০ এমবিপিএস স্পিডের প্যাকেজের দাম ছিল ১,১৯৯ টাকা। এছাড়া, Amber IT-এর ১২ এমবিপিএস স্পিডের প্যাকেজের দাম ছিল ৫০০ টাকা, যা তুলনামূলকভাবে সাশ্রয়ী ছিল।
আইএসপি প্রতিষ্ঠানগুলোর উদ্যোগ
ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (আইএসপিএবি) তাদের সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে ৫০০ টাকায় ১০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট সরবরাহের নিশ্চয়তা দিয়েছে। এই উদ্যোগটি গ্রাহকদের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যে ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে।
সরকারের নীতিগত সহায়তা
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের প্রধান উপদেষ্টা ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব এই উদ্যোগগুলোর প্রশংসা করে বলেন, সরকার মোবাইল অপারেটরদের ডিডব্লিউডিএম (DWDM) এবং ডার্ক ফাইবার অবকাঠামোতে অ্যাক্সেস প্রদান করেছে, যা তাদের পরিচালন ব্যয় হ্রাস করে। এখন তাদের দায়িত্ব হচ্ছে এই সুবিধাগুলো ব্যবহার করে গ্রাহকদের জন্য ইন্টারনেটের দাম কমানো।
মোবাইল অপারেটরদের ভূমিকা
বর্তমানে, রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল অপারেটর টেলিটক ঈদুল ফিতরের পর থেকে তাদের ইন্টারনেট সেবায় ১০% মূল্য ছাড় ঘোষণা করেছে। সরকার আশা করে, বেসরকারি মোবাইল অপারেটরগুলোও শীঘ্রই তাদের ইন্টারনেট সেবার দাম কমাবে, যাতে গ্রাহকরা সাশ্রয়ী মূল্যে মানসম্মত সেবা পেতে পারে।
সামিট কমিউনিকেশনসের মতো প্রতিষ্ঠানসমূহের এই উদ্যোগ এবং সরকারের নীতিগত সহায়তা বাংলাদেশের ইন্টারনেট সেবার মান উন্নয়ন এবং খরচ কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এই পদক্ষেপগুলো ডিজিটাল বাংলাদেশের লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়ার পথে একটি ইতিবাচক পরিবর্তন হিসেবে বিবেচিত হবে। তবে, আরও দাম কমানোর জন্য সরকার এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে একযোগভাবে কাজ করতে হবে, যাতে গ্রাহকদের জন্য মানসম্মত এবং সাশ্রয়ী ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিত করা যায়।