করোনারি হৃদরোগ কী তা এখন আমরা কমবেশি জানি। হার্টের আর্টারিতে কোলেস্টেরল জমে জমে রক্ত চলাচলে ব্যাঘাত ঘটে।
ফলে হার্ট বঞ্চিত হয় তার প্রয়োজনীয় অক্সিজেন এবং পুষ্টি থেকে।
এরই প্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখা দেয় বুকে ব্যথা ও চাপ, শ্বাসকষ্টসহ আরো নানা উপসর্গ। আমরা যদি দেখি, এ রোগ হয় কেন?
ধূমপান, অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস, বিজ্ঞাপন-নির্ভর এবং পুষ্টিবিজ্ঞান অসমর্থিত খাদ্যাভ্যাস, ব্যায়াম না করা, আধুনিক জীবনের নানামুখী চাপ এবং টেনশন করোনারি হৃদরোগের প্রধান কারণ।
আমাদের হার্টের চারপাশে বেশ কিছু সংখ্যক ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রক্তনালি রয়েছে। নিয়মিত হাঁটা এবং ব্যায়ামের মধ্য দিয়ে এই পরিপূরক রক্তনালিগুলো সক্রিয় ও কর্মক্ষম হয়ে ওঠে।
হার্টের মূল রক্তনালিগুলোর মধ্য দিয়ে ব্লকেজের কারণে স্বাভাবিক রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে এই পরিপূরক রক্তনালিগুলো প্রয়োজনীয় কাজটুকু চালিয়ে নেয়।
মূলত: এটাই ন্যাচারাল বাইপাস। ন্যাচারাল বাইপাস ঘটে থাকে কোলেটারাল সারকুলেশনের মাধ্যমে।
আমাদের দেহকোষের প্রধান খাবার হচ্ছে অক্সিজেন। নিঃশ্বাসের সাথে গৃহীত অক্সিজেন রক্তের মাধ্যমে কোষে কোষে পৌঁছে যায়।আমাদের হৃদপিণ্ডে যে রক্ত প্রবাহিত হয়, তা আসে ধমনী দিয়ে।
কিন্তু কোনো কারণে ধমনীর নালী সরু বা পুরু (আর্টারি ব্লকেজ) হয়ে গেলে রক্তপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়। কখনো কখনো আচমকা রক্ত জমাট বেঁধে নালীর ভেতরে রক্ত প্রবাহ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।
এটাই হলো হার্ট অ্যাটাক।আর্টারি ব্লকেজ হতে পারে নানা কারণে । প্রধান কারণ হলো ধমনীর গায়ে কোলেস্টেরল ও চর্বি জমাট বাধা।
এ-ছাড়াও উচ্চ রক্তচাপ, ডায়বেটিস, মেদস্থুলতার কারণেও আর্টারি ব্লকেজ হতে পারে।
হৃদরোগ থেকে নিরাময় ও সুস্থ জীবনযাপনের জন্যে নিয়মিত হাঁটা, ব্যায়াম, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, ধূমপান বর্জন আর টেনশনমুক্ত থাকাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।
কারণ, করোনারি হৃদরোগের প্রচলিত চিকিৎসাগুলো রোগীদের জীবনে কোনো স্থায়ী সমাধান দিতে পারছে না।
মেডিটেশন এবং সুস্থ জীবনযাপনের মাধ্যমে করোনারি হৃদরোগ নিরাময়ের পথিকৃৎ ক্যালিফোর্নিয়ার ডা. ডিন অরনিশ।
এ থেকেই বোঝা যায়, হৃদরোগ নিরাময়ের জন্যে সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও সুস্থ জীবনাচার অনুশীলনের গুরুত্ব কতটা বেশী।