যুগান্তকারী চিকিৎসায় বিজ্ঞানের নতুন আবিষ্কার, জীবন বাঁচাবে কৃত্রিম রক্ত। ৯ জুন ২০২৫

বিজ্ঞানের নতুন আবিষ্কার, জীবন বাঁচাবে কৃত্রিম রক্ত

যুগান্তকারী চিকিৎসা উদ্ভাবনের পথে এগিয়ে চলেছেন বিজ্ঞানীরা। তাদের এ উদ্ভাবনে বাঁচতে পারে লাখো মানুষের জীবন।

বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, তারা সর্বজনীন কৃত্রিম রক্তের কার্যকারিতা নিয়ে পরীক্ষা শুরু করেছেন।

শুক্রবার (০৬ জুন) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাপানের গবেষকরা একটি যুগান্তকারী চিকিৎসা উদ্ভাবনের পথে এগিয়ে চলেছেন, যা লাখ লাখ মানুষের জীবন বাঁচাতে পারে।

নারা মেডিকেল ইউনিভার্সিটির প্রফেসর হিরোমি সাকাইয়ের নেতৃত্বে গবেষকরা সর্বজনীন কৃত্রিম রক্তের কার্যকারিতা এবং নিরাপত্তা পরীক্ষা করতে ক্লিনিকাল ট্রায়াল শুরু করেছেন।

এই কৃত্রিম রক্ত সব রক্তের গ্রুপের জন্য ব্যবহারযোগ্য এবং এর শেলফ লাইফ দুই বছর পর্যন্ত হতে পারে। সফল হলে, এটি বিশ্বব্যাপী জরুরি চিকিৎসা ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনতে পারে।

এই পদ্ধতিতে মেয়াদোত্তীর্ণ দানকৃত রক্ত থেকে হিমোগ্লোবিন নিষ্কাশন করা হয়। এটি একটি প্রতিরক্ষামূলক আবরণে মোড়ানো হয়ে স্থিতিশীল এবং ভাইরাসমুক্ত কৃত্রিম লোহিত কণিকা তৈরি করে।

এই কৃত্রিম রক্ত সব ধরনের রক্তের গ্রুপের জন্য উপযোগী, অর্থাৎ রক্তের গ্রুপ মিলিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন নেই।

সাধারণভাবে সংগৃহীত রক্তের সংরক্ষণক্ষমতা যেখানে মাত্র ৪২ দিন, সেখানে এই কৃত্রিম রক্ত সংরক্ষণ করা যাবে প্রায় দুই বছর পর্যন্ত।

চলতি বছরের মার্চ মাসে ১৬ জন সুস্থ প্রাপ্তবয়স্ক স্বেচ্ছাসেবীর শরীরে ১০০ থেকে ৪০০ মিলিলিটার কৃত্রিম রক্ত প্রয়োগ করে প্রথম ধাপের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু হয়েছে।

নিরাপত্তা ও কার্যকারিতা নিশ্চিত হলে, গবেষকেরা আশা করছেন যে ২০৩০ সালের মধ্যেই এটি ব্যবহারিক চিকিৎসায় অনুমোদন পাবে, ফলে জাপান হবে বিশ্বের প্রথম দেশ যেখানে কৃত্রিম রক্ত ব্যবহারিকভাবে চালু হবে।

প্রফেসর সাকাই বলেন, লোহিত কণিকার কোনো নিরাপদ বিকল্প বর্তমানে নেই, তাই কৃত্রিম রক্তকণিকার চাহিদা অনেক বেশি।

ক্লিনিকাল ট্রায়াল শুরুর ঘোষণায় সামাজিক মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা এর সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন।

কেউ কেউ এটিকে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী উদ্যোগ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

একজন ব্যবহারকারী বলেন, যদি এটি সত্য হয় এবং অতিরিক্ত ব্যয়বহুল না হয়, তবে এটি সম্পূর্ণ রূপান্তরকারী হবে।

আরেকজন যোগ করেন, যদি এটি নিরাপদ হয়, তবে এটি নোবেল পুরস্কারের যোগ্য।

আরেক ব্যক্তি মন্তব্য করেন, দাঁত পুনর্জনন, বিড়ালের আয়ু বাড়ানোর ইনজেকশন এবং এই কৃত্রিম রক্তের মধ্যে জাপানি বিজ্ঞানীরা সত্যিই অসাধারণ কাজ করছেন।

আশা করি এটি বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়বে।

উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রও একইরকম একটি কৃত্রিম রক্ত প্রকল্পে কাজ করছে, যার নাম ‘এরিথ্রোমার’।

এটি ‘রিকাইকেল্ড হিমোগ্লোবিন’ থেকে তৈরি এবং ইতিমধ্যেই প্রাক-ক্লিনিক্যাল পর্যায়ে পৌঁছেছে।

গত বছর ডিফেন্স অ্যাডভান্সড রিসার্চ প্রোজেক্টস এজেন্সি (ডিএআরপিএ) ইউনিভার্সিটি অফ মেরিল্যান্ডের নেতৃত্বে একটি কনসোর্টিয়ামকে এরিথ্রোমার প্রকল্পে ৪৬ মিলিয়ন ডলারের অনুদান ঘোষণা করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *