তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার নিয়ম জেনে নিন। ১৩ জুন ২০২৫

তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার নিয়ম জেনে নিন।

মাঝ রাতে ঘুম থেকে জাগ্রত হয়ে যে নামাজ পড়া হয়, তাকে তাহাজ্জুদের নামাজ বলা হয়।

তাহাজ্জুদ নামাজের অনেক ফজিলত রয়েছে। যত্নের সঙ্গে তাহাজ্জুদ আদায়কারীরা কেয়ামতের দিন বিনা হিসেবে জান্নাতে প্রবেশ করবেন।

এ নামাজের পর দোয়া কবুল হয়। প্রতিরাতে তাহাজ্জুদের সময় আল্লাহতায়ালা প্রথম আসমানে নেমে আসেন এবং বান্দার ফরিয়াদ শোনেন।

হাদিসে আছে, শেষ রাতে; পৃথিবী যখন ঘুমিয়ে পড়ে তখন আল্লাহতায়ালা বান্দাদের ডেকে বলেন, ‘কে আছো আমাকে ডাকবে? আমি তার ডাকে সাড়া দেব।

কে আছো আমার কাছে চাবি? আমি তাকে তা দেব। কে আছো আমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবে? আমি তাকে ক্ষমা করব।’ (বুখারি : ১১৪৫)।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তাহাজ্জুদ নামাজ তোমাদের নিয়মিত পড়া উচিত, কেননা এটা অতীতকালের সৎলোকদের আমল ও আল্লাহর নৈকট্য লাভের মাধ্যম ছিল।

এ আমল পাপকাজ থেকে বিরত রাখে, মন্দকাজ দূর করে আর শারীরিক রোগব্যাধি থেকে রক্ষা করে।’ (তিরমিজি) তাহাজ্জুদ নামাজের সময় : রাতের শেষার্ধে ঘুম থেকে জাগ্রত হয়ে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করা উত্তম।

যদিও এশার নামাজের পর বা রাতে ঘুমানোর আগে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করা যায়।

তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ত : তাহাজ্জুদ নামাজসহ সব নামাজের নিয়ত মনে মনে করতে হয়।

তাই তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ত মনে মনে এমন সংকল্প করা, ‘আমি তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করছি’ বলে নামাজে দাঁড়ালেই হবে।

রাকাত সংখ্যা : তাহাজ্জুদ নামাজ ২ থেকে ২০ রাকাত পর্যন্ত পড়ার বর্ণনা পাওয়া যায়। রাসুলুল্লাহ (সা.) কখনো ৪, কখনো ৮ এবং কখনো ১২ রাকাত আদায় করতেন।

আয়েশা (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) সারা বছর তাহাজ্জুদ নামাজ ৮ রাকাত আদায় করতেন।’ (বুখারি) আমরাও আমাদের সময় সুযোগমতো সম্ভব হলে ১২ রাকাত, সম্ভব না হলে কমপক্ষে ৪ রাকাত আদায় করার চেষ্টা করব।

তবে ২ রাকাত আদায় করলেও তাহাজ্জুদের নেকি পাওয়া যাবে। যেভাবে তাহাজ্জুদ আদায় করব : রাসুলুল্লাহ (সা.) ২ রাকাত করে এ নামাজ আদায় করতেন। আবার এক সালামে ৪ এবং এক সালামে ৮ রাকাত পড়েছেন এমন বর্ণনাও পাওয়া যায়।

তবে ২ রাকাত করে পড়াই উত্তম। তাহাজ্জুদ নামাজের নির্দিষ্ট কোনো সুরা নেই। যে কোনো সুরা পাঠ করা যায়। রাসুলুল্লাহ (সা.) লম্বা লম্বা কেরাত পড়তেন।

তাই লম্বা কেরাতে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করা উত্তম। তাহাজ্জুদ নামাজে রুকু-সিজদাসহ অন্যান্য পর্ব দীর্ঘায়িত করা মুস্তাহাব।

রুকু-সিজদার তাসবিহ অনেকবার পড়া যায় এবং সিজদায় কোরআন-হাদিসে বর্ণিত বিভিন্ন দোয়া পাঠের বিধানও আছে।

বিতর নামাজ কখন পড়বেন : অনেকে মনে করেন, বিতর নামাজ আদায়ের পর তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করা যায় না। এটা ভুল ধারণা।

উত্তম হলো যিনি নিয়মিত শেষ রাতে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করেন তিনি তাহাজ্জুদ নামাজের পর বিতর নামাজ আদায় করবেন।

আর যে ব্যক্তি শেষ রাতে ওঠার অভ্যাস নেই, সে রাতের প্রথম অংশে এশার নামাজের পর বিতর পড়ে নেবেন।
অথবা
এশার পর দু-চার রাকাত তাহাজ্জুদের নিয়তে নফল আদায় করে বিতের নামাজ আদায় করবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *