কোরবানির গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে আলোচনা। ২৪ মে ২০২৫

কোরবানির গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে আলোচনা।

কোরবানি শব্দটির অর্থই ভেসে আসে আত্মত্যাগ, আনুগত্য ও আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের আহ্বান। এটি কেবল একটি আনুষ্ঠানিক ধর্মীয় আচার নয়, বরং একজন মুমিন বান্দার ইমানের বহিঃপ্রকাশ।

ইসলাম এমন একটি জীবনব্যবস্থা, যেখানে মানুষের প্রতিটি ইবাদতের মূল উদ্দেশ্য হলো আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন।

ঈদুল আজহা, যা কোরবানির ঈদ নামে পরিচিত, এটা মূলত সেই ঐতিহাসিক ত্যাগের এক স্মৃতিচারণ। এটি শুধু নিছক পশু জবাই নয়, বরং অন্তরের অহংকার, গুনাহ এবং আত্মকেন্দ্রিকতার পশুত্বের জবাই করার শপথ।

এই ইবাদতের মাধ্যমে একদিকে যেমন গরিব-দুঃখীদের মুখে হাসি ফোটে, তেমনি সমাজে সাম্য ও সহানুভূতির মূল্যবোধ বিস্তার লাভ করে। কোরবানি আমাদের শেখায়, আল্লাহর পথে কিছু ত্যাগ করলেই প্রকৃত অর্থে পাওয়া যায় তার অপার রহমত ও নৈকট্য।

এটি শুরু হয়েছে আদি মানব হজরত আদম (আ.)-এর যুগে, তার পুত্রদের কোরবানির কাহিনি দিয়ে এবং পূর্ণতা পেয়েছে হজরত ইবরাহিম (আ.) ও তার পুত্র ইসমাইল (আ.)-এর আত্মোৎসর্গের ঘটনার মাধ্যমে।

পিতা যখন প্রভুর আদেশে পুত্রকে কোরবানি করতে উদ্যত হন, তখনকার সেই একান্ত আনুগত্য ও নিষ্ঠা আজও প্রতিটি মুসলিম হৃদয়ে কাঁপন তুলে। আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস, তার আদেশ পালনে আপসহীনতা এবং ইমানের গভীরতা কোরবানির মাধ্যমে প্রকাশ পায়।

পশুর রক্ত জমিনে পড়ার আগেই আল্লাহতায়ালার কাছে তা বিশেষ মর্যাদায় পৌঁছে যায়। সুতরাং তোমরা আনন্দচিত্তে কোরবানি করো। (তিরমিজি)

বলা বাহুল্য, কোরবানিসহ মোমিনের প্রতিটি ইবাদত ও পুণ্যকাজ শুধু আল্লাহতায়ালার হুকুম পালন এবং সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশে হতে হবে। আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, ‘বলো, নিশ্চয় আমার নামাজ, আমার কোরবানি, আমার জীবন ও আমার মৃত্যু বিশ্ব প্রতিপালক আল্লাহর জন্য।’ (সুরা আনআম ১৬২)

আল্লাহতায়ালা আরও ইরশাদ করেন, ‘কোরবানির জন্তুর গোশত, রক্ত আল্লাহর কাছে পৌঁছে না, বরং পৌঁছে তোমাদের তাকওয়া (অন্তরের বিশ্বস্ততা)।’ (সুরা হজ ৩৭) মহান আল্লাহ আমাদের যথাযথভাবে কোরবানি করার তওফিক দান করুন। আমিন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *