দুর্ভোগ যেন পিছু ছাড়ছে না ঈদে ঘরমুখো মানুষের। ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে ২৫ কিলোমিটার এলাকায় বৃহস্পতিবার ভোর থেকে থেমে থেমে সৃষ্টি হওয়া যানজট রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্তও স্বাভাবিক হয়নি।
একদিকে যানজট অপরদিকে বৃষ্টি থাকায় চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন ঈদে ঘরমুখো সাধারণ মানুষ।
সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন খোলা ট্রাক, পিকআপের যাত্রীরা। মহাসড়কটিতে বাস, ট্রাক, পিকআপের পাশাপাশি ব্যক্তিগত গাড়ি ও মোটরসাইকেল চলাচল করছে স্বাভাবিকের চাইতে কয়েকগুণ বেশি।
ট্রাকের যাত্রী গার্মেন্টস কর্মী বগুড়ার সালাউদ্দিন মিয়া জানান, সকাল সাড়ে ৭টায় তিনি বাস না পেয়ে ৫০০ টাকা ভাড়ায় ট্রাকে উঠেছেন। এখন বিকাল ৩টায় এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ড এসে পৌঁছেছেন।
ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা আজমেরী গৌরী পরিবহণের যাত্রী মল্লিকা খাতুন জানান, সকাল ৮টার দিকে বাসে উঠেছেন সিরাজগঞ্জ যাওয়ার জন্য।
এখন আড়াইটা বাজে। যানজটের কারণে এলেঙ্গার পৌলী পর্যন্ত এসেছেন।
বগুড়ার আব্দুল হাই জানান, বাস না পাওয়ায় বাধ্য হয়ে স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে পিকআপে উঠে ঈদ করতে বাড়ি যাচ্ছেন। যানজট আর বৃষ্টির কারণে দুর্ভোগের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
বগুড়াগামী মাসুদ রানা নামে এক যাত্রী বলেন, ঈদে বাড়ি যেতে হবে। এমনিতেই যানজট মহাসড়কে এর মধ্যে বৃষ্টি খুবই ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
মামুন নামে একজন বলেন, স্ত্রী ও শিশু সন্তান নিয়ে খোলা পিকআপে যাচ্ছি বাড়িতে। এর মধ্যে বৃষ্টি এসেছে। কি আর করার উপরে কাগজ দিয়ে বাড়ি যাচ্ছি।
এলেঙ্গা হাইওয়ে ফাঁড়ির ইনচার্জ মোহাম্মদ শরীফ বলেন, এখন মহাসড়কে ধীরগতিতে গাড়ি চলছে থেমে নেই কোথাও।
ঢাকাগামী গাড়ি গুলো গোলচত্বর থেকে ভূঞাপুর দিয়ে ঢাকার দিকে পাঠানো হচ্ছে। এছাড়া এলেঙ্গা থেকে যমুনা সেতু পর্যন্ত দুই লেনে গাড়ি উত্তরের পথে পাঠানো হচ্ছে।
এদিকে বৃহস্পতিবার রাত ১২টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত যমুনা সেতু দিয়ে ৩৮ হাজার ৫৫৫টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এতে টোল আদায় হয়েছে দুই কোটি ৫৯ লাখ চার হাজার ২৭০ টাকা।
যমুনা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবির পাভেল জানান, অতিরিক্ত যানবাহনের চাপ থাকায় সেতুর উপর যান চলাচল বিঘ্ন ঘটে।
এ কারণে বৃহস্পতিবার ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত চারবার টোল আদায় বন্ধ রাখা হয়। বর্তমানে সেতু দিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও যানবাহনের প্রচুর চাপ রয়েছে।
টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান জানান, মহাসড়কে ডাকাতি রোধে এবং যানজট নিরসনে ৬ শতাধিক পুলিশ দায়িত্ব পালন করছে। পাশাপাশি সেনাবাহিনী, র্যাব সদস্যরাও কাজ করছেন।