গ্রীষ্মকালে সবচেয়ে জনপ্রিয় ফলগুলোর মধ্যে আম শীর্ষে। ফলের রাজা আম শুধু স্বাদের জন্যই নয়, অসংখ্য পুষ্টিগুনাগুণের জন্যও বিখ্যাত।
আমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ, সি, ই, কে এবং ফোলেট। এতে ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম এবং ফাইবারও রয়েছে। এই পুষ্টিগুলো দেহের সার্বিক কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
ভিটামিন সি এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে। শরীরকে ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া এবং মৌসুমী রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে।
ত্বককে উজ্জ্বল ও তরতাজা রাখে। ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে সুরক্ষা দেয় এবং বয়সের ছাপ কমাতে সহায়ক। ভিটামিন এ চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়।
আমে থাকা ফাইবার হজম শক্তি বৃদ্ধি করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহায়ক। এটি পেট পরিষ্কার রাখে।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। সঠিক পরিমাণে আম খেলে ওজন বাড়ার ঝুঁকি থাকে না। আম ডায়াবেটিস রোগীদের জন্যও উপকারী।
আমে ভিটামিন বি৬ থাকে, যা মানসিক চাপ কমাতে এবং মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
আমের মধ্যে থাকা বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপাদান শরীরকে ক্যান্সারের মতো মারাত্মক রোগের ঝুঁকি থেকে সুরক্ষা দিতে সাহায্য করে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, আমের পুষ্টিগুণ কোলন ক্যান্সার, স্তন ক্যান্সার, প্রোস্টেট ক্যান্সার, এমনকি লিউকেমিয়া প্রতিরোধে সাহায্য করে।
তাই নিয়মিত পরিমাণে আম খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে।
আম কীভাবে সংরক্ষণ করবেন :
বেশ কিছুদিনের জন্য সংরক্ষণ করতে চাইলে বেশি পাকা আম না নেওয়া ভালো। খানিকটা শক্ত ও খোসায় কোনও দাগ নেই এমন আম বাছাই করুন।
আম টুকরো করে কেটে নিন। আঁটির চারপাশ থেকে আম কেটে নিয়ে আঁটি ফেলে দিন। এবার বক্সে আমের টুকরো নিয়ে মুখবন্ধ করে নিন শক্ত ঢাকনা দিয়ে। রেখে দিন ডিপ ফ্রিজে।
আম সংরক্ষণ করতে পারেন জিপলক ব্যাগে। এজন্য আম ছোট টুকরা করে কেটে জিপলক ব্যাগে নিয়ে নিন। মুখবন্ধ করে সামান্য একটু ফাঁকা রাখুন।
ঐ ফাঁকা অংশ দিয়ে স্ট্র ঢুকিয়ে ভেতরে থাকা বাতাস বের করে মুখ পুরোপুরি সিল করে দিন। রেখে দিন ফ্রিজারে।
আম যদি পেকে নরম হয়ে যায় তবে কাগজের প্যাকেটে নিয়ে ফ্রিজে রাখুন। ৬ দিন পর্যন্ত নরমাল ফ্রিজে ভালো থাকবে পাকা আম।
আমের পিউরি করে সংরক্ষণ করতে পারেন। এজন্য ব্লেন্ডারে মসৃণ করে ব্লেন্ড করে বরফ জমানোর ট্রেতে করে রেখে দিন ডিপ ফ্রিজে।
১০ থেকে ১২ ঘণ্টা পর বের করে ট্রে থেকে আমের বরফগুলো আলাদা করে নিন। সেগুলো জিপলক ব্যাগে নিয়ে বাতাস বের করে সিল করে দিন। রেখে দিন ডিপ ফ্রিজে।
আম ব্লেন্ড করে বরফের ট্রে বা ছোট মুখ বন্ধ বাটিতে অল্প পরিমাণে নিয়ে ডিপ ফ্রিজে রেখে দিন। বরফ জমে গেলে কিউবগুলো বের করে জিপলক ব্যাগে নিয়ে ফ্রিজারে রেখে দিন আবারও।
আস্ত আম খবরের কাগজ দিয়ে মুড়ে জিপলক ব্যাগ বা মুখবন্ধ প্লাস্টিকের র্যাপে নিয়ে রেখে দিন ফ্রিজারে।